How many friends you have in Facebook?
ফেইসবুক, টুইটার বা এ ধরনের অনলাইন বন্ধুত্বের সুবিধা হলো এর খরচও কম, ঝামালাও তেমন নেই। একবার ফেইসবুক খুলে অনলাইনে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো তরুণ এক বিরাট সামাজিক সম্পর্কসূত্র গড়ে তুলতে পারে। সেখানে থাকে দৈনন্দিন জীবনের নানা ঘটনা, ছবি, 'status update' এবং ছোটখাটো আরও অনেক বিষয়। অনুমতি নিয়ে ওরা একে অপরের ভেতরে ঢুকতে পারে, অভিন্ন জীবনগাথা গড়ে তুলতে পারে। এত সহজে যখন বন্ধুত্ব হতে পারে, তাহলে তো বন্ধুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকারই কথা। কিন্তু তা হয় না। কারণ কম্পিউটারের মাধ্যমে যোগাযোগ সহজ হলেও, মাথা খাটাতে হয়, আর এই ক্ষমতা অসীম নয়। তাই ফেইসবুকেও বন্ধুসংখ্যার একটা সীমা আছে। Oxford বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ববিদ রবিন ডানবার কয়েক বছর আগে এই সিদ্ধান্তে আসেন, কোনো প্রজাতির প্রাণীর মস্তিস্ক কতজনকে চিনতে পারার ক্ষমতা রাখে তার ওপর নির্ভর করে সামাজিক সম্পর্কসূত্রের বিস্তৃতি। তিনি এক জটিল হিসাব করে বের করেন, মানুষের মস্তিস্কের যে আকার তাতে সে প্রায় ১৪৮ জনের সঙ্গে দৃঢ় সামাজিক বন্ধন রক্ষা করতে পারে। এ থেকে ১৫০ হয়ে উঠেছে ডানবার-সংখ্যা। সেই আদিম মানুষের ছোট ছোট ক্ল্যান থেকে শুরু করে রোমের ছোট সেনা ইউনিটের সদস্যসংখ্যাও ১৫০-এর কাছাকাছি ছিল। এই সখ্যাটি ফেইসবুকের বেলায় সামাজিক সম্পর্কসূত্র কেমন তা যাচাইয়ের জন্য সম্প্রতি দি ইকোনমিস্ট পত্রিকার পক্ষ থেকে তাঁদের সমাজবিজ্ঞানী ক্যামেরন মারলোকে অনুরোধ করেন। মারলোর গবেষণায় দেখা গেছে, ফেইসবুকে বন্ধুসংখ্যা গড়ে ১২০, যা ডানবার-সংখ্যার কাছাকাছি। তবে কারও কারও ফেইসবুকে বন্ধুর সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, সংখ্যা বেশি হলেও প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৭ জন বন্ধুর সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখতে দেখা যায়। মেয়েরা বেশি সামাজিক, তারা গড়ে ১০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। যাদের ফেসবুকে বন্ধুর সংখ্যা ৫০০ বা তারও বেশি, তাদের মধ্যে ছেলেরা গড়ে ১৭ ও মেয়েরা ২৬ জনের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখে। ফেসবুক মানুষের একটি সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার প্রবণতা প্রকাশ করে। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এখণ মানুষের যোগাযোগ প্রসারের সুযোগ অসীম হলেও, বাস্তবে সেটা ঘনিষ্ঠ কিছু ও পরিচিতজনের বাইরে খুব বেশি বিস্তৃত নয়।
Comments
Post a Comment